আপনি কি মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায় সম্বন্ধে খোঁজাখুঁজি করছেন?
যদি হ্যাঁ হয় তবে এই লেখাটি আপনার কাজকে সহজ করে দেবে।
এই আর্টিকেলে আপনি মোবাইলে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
তাছাড়া এখানে আপনি যে সমস্ত মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন তা সহজেই শুরু করতে পারবেন যদি আপনার কাছে ইন্টারনেট এবং একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন থাকে।

ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করুন
প্রথমেই আপনাকে বলব youtube ভিডিও তৈরি করে পাবলিশ করতে।
জানেন তো বর্তমানে ইউটিউব হলো সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে কোটি কোটি মানুষ ভিডিও দেখে। নিশ্চয়ই আপনিও তাদের মধ্যে একজন।
যাই হোক আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন যে এই ভিডিওগুলি কোথা থেকে আসছে। এই ভিডিওগুলি আমার আপনার মত কোন ব্যক্তিরই তৈরি করা ভিডিও।
আপনি বলবেন এই ভিডিও তৈরি করে আমার কি লাভ,
লাভ তো অনেক আছে। কারণ এই ভিডিও তৈরি করে আপনি অনলাইন থেকে বেশ ভালো পরিমান ইনকাম করতে পারবেন।
এখান থেকে আপনি তিন রকম ভাবে ইনকাম করতে পারবেন। যেমন- গুগল এডসেন্স থেকে, স্পন্সারশিপ এর মাধ্যমে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে।
তবে আপনার প্রধান ইনকাম সোর্স টি হলো গুগল এডসেন্স।
youtube থেকে ইনকাম করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। সেখানে নানা ধরনের ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে হবে।
সেটা যে কোন ভিডিও হতে পারে তবে ইউটিউবের নিয়মের বাইরে নয়। সেজন্য youtube এর গাইডলাইন বা নিয়মগুলি পড়ে নেবেন।
এরপর আপনাকে এক হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ওয়াচ টাইম ৩৬৫ দিনের মধ্যে পূরণ করতে হবে।
এটি করতে পারলেই আপনি গুগল এডসেন্স এ যোগ দেবার জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
এরপর এডসেন্স অ্যাপ্রভ হয়ে গেলে আপনার ভিডিওতে এড লাগাতে পারবেন, এই অ্যাড থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম
প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি,
এফিলেট মার্কেটিং হলে এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যেখানে আপনি কোন কোম্পানির পন্য বা সার্ভিস বিক্রি করতে পারলে বিনিময়ে কমিশন পাবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে, আপনাকে কোন কোম্পানির পণ্যকে নিয়ে আপনার ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রমোট করতে হবে যার ফলে দর্শকেরা বা ভিজিটরেরা আপনার পন্যটির লিংকে ক্লিক করে কোন জিনিস কিনলে তার থেকে কমিশন পাবেন।
ব্লগিং করে ইনকাম করুন
অনলাইনে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করাকে বলা হয় ব্লগিং।
এখানে আপনাকে আর্টিকেল বা ব্লগ লিখে পাবলিশ করতে হবে। এটি করলে আপনার সাইটে দর্শক বা visitor আসবে।
এই ভিজিটরদেরকে অ্যাফিলিয়েট পণ্য প্রমোট এবং গুগল এডসেন্সের এড দেখিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।
এই ব্লগিং শুরু করতে আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেস অথবা ব্লগার ডট কম এর মাধ্যমে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
তারপর সেটি কাস্টমাইজ করে নিতে হবে। এরপর আপনাকে নিজের হাতে লেখা ব্লগ ওয়েবসাইটটিতে পাবলিশ করতে হবে।
তবে প্রথমের দিকে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার জন্য খরচা করতে হবে। একবার হোস্টিং কেনা হলে তারপর যখন আপনি ইনকাম করবেন সেই ইনকামের টাকা দিয়েই ডোমেন এবং হোস্টিং রিনিউ করে নেবেন।
বর্তমানে একটি ডোমেন অর্থাৎ ওয়েবসাইটের নাম রেজিস্টার ১০০ থেকে ২০০ টাকাতে করতে পারবেন।
আর যদি হোস্টিং না কিনতে চান তবে ব্লগার ডট কম থেকে ফ্রিতে হোস্টিং ব্যবহার করতে পারবেন।
ডোমেন বিক্রি করে ইনকাম
আপনি হয়তো বুঝে গেছেন একটি ডোমেইন বলতে ওয়েবসাইটের নামকে বোঝাই। এই নাম ওয়েবসাইট তৈরি করতে প্রয়োজন হয়।
এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে তা হল আপনাকে কিছু টাকা ইনভেস্ট করে কয়েকটি ডোমেইন কিনে রাখতে হবে এবং সেই ডোমেইনগুলি পুনরায় বেশি টাকায় বিক্রি করতে হবে। এইরকম ডোমেন বিক্রি করাকে ডোমেন ফ্লিপিং বলে।
এটি করতে আপনাকে একটি ডোমেইন মার্কেটপ্লেসের সাহায্য নিতে হবে যেমন – namechape, godaddy ইত্যাদি।
ফটো বিক্রি করে ইনকাম
হ্যাঁ ঠিকই পরছেন। বর্তমানে আপনি মোবাইলে ফটো বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন। এবং সেই ছবিগুলি যেকোনো ছবি হতে পারে তা প্রাকৃতিক দৃশ্যই হোক বা যা কিছু ছবি।
তবে এর জন্য যে আপনাকে ভালো ক্যামেরা কিনে তাতে ফটো তুলতে হবে তার কোন মানে নেই। আপনি আপনার মোবাইলে তোলা ফটো অনলাইনে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
বর্তমানে বিভিন্ন ছবি বিক্রির মার্কেটপ্লেস বা ওয়েবসাইট আছে যেখানে ছবি বিক্রি করে ভালো মানের ইনকাম করা যায়। যেমন – সাটার স্টক, ফোপ ইত্যাদি।
এই মার্কেটপ্লেস গুলিতে ছবি বিক্রি করার জন্য আপনাকে ফিতে একটি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে এবং অবশ্যই আপনার একটি পেপাল একাউন্ট তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি ছবি বিক্রির টাকা বা পেমেন্টগুলি নিবেন।
এই পদ্ধতিতে ইনকাম করতে অর্থাৎ ছবি বিক্রি করতে তেমন কোন খরচা নেই কারণ আপনার কাছে যদি ভালো ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট থাকে তাহলে আপনি অনলাইন ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং হল মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত পদ্ধতি। এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হয় তাহলো আপনাকে অন্য কোন ব্যক্তি বা কোম্পানিকে কোন নির্দিষ্ট সার্ভিস প্রদান করতে হয়।
যা কিছু হতে পারে তা ভিডিও এডিটিং থেকে শুরু করে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে প্রথমেই একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে যুক্ত হতে হবে এবং একটি সেলার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনি যেই কাজটি করবেন সেটি সম্বন্ধে একটি গিগ তৈরি করতে হবে।
কিছুদিনের মধ্যেই আপনার কাছে অর্ডার আসবে, সেই অর্ডার গুলি নিয়ে কাজটি সম্পন্ন করে দিতে পারলেই টাকা পেয়ে যাবেন। এরকম কয়েকটি ফ্রিল্যান্সিংয়ের মার্কেটপ্লেস হল ফাইবার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি
অনলাইনে কোর্স বিক্রি
আপনি কোন বিষয়ে পারদর্শী বা শিক্ষক হন তবে আপনিও অনলাইনে কোর্স বানিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে আপনার জ্ঞানের মাধ্যমে ভিডিও আকার একটি কোর্সের লিস্ট তৈরি করতে হবে এবং সেই ভিডিওগুলি আপনার নিজের ওয়েবসাইটে বা udemy এর মত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোর্স গুলি বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি এই কোর্স যে কোন বিষয়ের উপর তৈরি করতে পারবেন। যারা আপনার কোর্স বা এড দেখে অনুপ্রাণিত হবে তারাই আপনার কোর্স কিনবে।
তবে অবশ্যই আপনাকে আপনার কোর্সগুলি ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ এর মাধ্যমে প্রমোট করতে হবে।
যদি আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল না থাকে তবে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনার কোর্সগুলি বিক্রি করতে পারবেন।
ই-কমার্স ব্যবসা
বর্তমানে জনপ্রিয় অনলাইনে মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলির মধ্যে একটি হলো ই-কমার্স ব্যবসা।
আরো ভালো বিষয় হলো যে বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে করা সম্ভব হচ্ছে। এই মার্কেটপ্লেসটির সুবিধা হল এখানে কোন কমিশন না দিয়েই অনেক বেশি পরিমাণে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছে দেয়া যায়।
তাছাড়া এই ব্যবসা শুরু করবার জন্য আপনি নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
সেখানে ডিজিটাল এড অর্থাৎ গুগল অথবা ফেসবুকে এড দিয়ে গ্রাহকের অর্ডার সংগ্রহ করতে পারেন।
তবে বর্তমানে অনেক ভালো কোম্পানির মার্কেটপ্লেস আছে যেমন amazon, দারাজ ইত্যাদি।
আপনি এই সমস্ত মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি করতে পারেন। এখানে বিক্রি করার সুবিধা হচ্ছে লোকেরা যখন পণ্য কিনবে তখন তারা অ্যামাজন থেকেই কিনছে এই ভেবে কিনবে ফলে অর্ডার প্রচুর পাবেন।
তবে আপনি যদি এদের মার্কেটপ্লেসে আপনার পণ্য বিক্রি করেন আপনাকে কিছু কমিশন এবং শিপিং চার্জ তাদেরকে দিতে হবে।
সর্বশেষ (মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায়)
আপনি যে সমস্ত মোবাইলে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলি জানলেন তার মধ্যে থেকে আমার হিসাবে অর্থাৎ আমি বলব আপনি youtube, ব্লগিং এবং এফিলেট মার্কেটিং শুরু করুন।
কারণ এই তিনটি কাজ আমি এক সঙ্গেই করতে পারবেন এবং একসঙ্গে ইনকাম করতে পারবেন।